বিভিন্ন অ্যাপ স্টোরে বর্তমানে প্রায় দুই মিলিয়ন এর উপর অ্যাপ রয়েছে, এত এত মোবাইল অ্যাপস এর মাঝে সার্চ ইঞ্জিনে নির্দিষ্ট অ্যাপটি খুজে পাওয়া খুব চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে গেছে। যেকোন মোবাইল অ্যাপ (যেমন, আইফোন, আইপ্যাড, অ্যান্ড্রয়েড অথবা উইন্ডোজ ফোন অ্যাপ) এর ভিজিবিলিটি বাড়ানোর জন্যে অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশন এর সমন্নিত প্রক্রিয়াগুলো ব্যবহার করা হয় যা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের সাথে অনেকখানিই সম্পর্কিত।
স্পেসিফিক করে বলতে গেলে অ্যাপ স্টোরে একটি অ্যাপকে সার্চ রেজাল্টে প্রথম দিকে কিংবা টপ সার্ট র্যাংকিং লিস্টে নিয়ে আসার জন্যে প্রক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয়। যে অ্যাপটির র্যাংকিং যত ভাল থাকে সেটি বিক্রয় কিংবা ডাওনলোড হবার সম্ভাবনাও তত বেড়ে যায়। তাই মোবাইল অ্যাপ পাবলিশারদের কাছেও বর্তমানে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি মার্কেটারদের জন্যে খুলে যাচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন জগতে নতুন একটি দিগন্ত। অ্যাপ মার্কেটিং এর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে যার সমন্নিত প্রক্রিয়ার নামই হল অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশন, তাদের মধ্যে যেগুলো সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয় তেমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক আজ শেয়ার করবো।
অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশনের উদ্দেশ্য:
- ব্যবহারকারীরা যেন সহজেই অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপটি খুজে পায়, কারণ অ্যাপ স্টোরের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করেই ৭০% ইউজাররা প্রয়োজনীয় অ্যাপটি খুজে বের করেন।
- প্রতিযোগীদের তুলনায় নিজেদের র্যাংকিং বাড়ানোর জন্যে
- নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ডের জন্যে র্যাংকিং বাড়ানো
- গুগলের সিম্যান্টিক সার্চে র্যাংকিং এ আসা
অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ফরেস্টার এর অনলাইন জরিপ অনুযায়ী, ৬৩% ব্যবহারকারী অ্যাপ স্টোরের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমেই তাদের প্রয়োজন মত নতুন অ্যাপ খুজে বের করেন। অ্যাঙ্কিট জেইন নামে একজন ডেভেলপার গুগল আই/ও তে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন “গুগল অ্যাপস্টোর থেকে বেশিরভাগ অ্যাপ সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টে খুজে পাওয়ার উপর নির্ভর করেই ব্যাপক হারে ডাওনলোড করা হয়” তারমানে মোবাইল অ্যাপ পাবলিশাররা অ্যাপসের সার্চ রেংকিং বাড়ানোর জন্যে যদি ASO ব্যবহার করে না থাকেন তবে তাদের অ্যাপটি জনপ্রিয় করার জন্যে সবচেয়ে বড় মাধ্যমগুলোর একটি মিস করছেন।
কিছুদিন আগেও বেশিরভাগ পাবলিশাররাই অ্যাপ স্টোর অপ্টিমাইজেশনে আগ্রহী ছিলেন না। প্রতিটি অ্যাপ স্টোরের শত হাজার অ্যাপ এর মাঝে একটি অ্যাপ এর সাথে আরেকটির প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবসময় লেগেই আছে এবং দিন দিন সেটা বাড়ার সাথে সাথে অ্যাপ পাবলিশাররা অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশনের দিকে ঝুকছেন। কারণ অ্যাপের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্যে “অ্যাপ স্টোর অপ্টিমাইজেশন” একটি সিক্রেট ওয়েপন।
অ্যাপ স্টোর অপ্টিমাইজেশনের মেকানিক্স:
অ্যাপ স্টোর অপ্টিমাইজেশনের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর গুলোকে দুটো ভাগে ভাগ করা যায়
১. প্রধান ফ্যাক্টর:
- শিরোনাম – অ্যাপসের শিরোনামে যে কিওয়ার্ডটি বসানো হয় সেটিই হতে পারে সার্চ ট্রাফিকের অন্যতম উৎস। কিওয়ার্ড নিয়ে রিসার্চের উপর কিছু সময় ব্যয় করুন, যাতে শিরোনাম বারবার পাল্টানোর প্রয়োজন না পরে। কারণ বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড নিয়ে বারবার শিরোনাম পাল্টানোর কারণে এর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। অ্যাপটি যখন পরিচিতি পেতে শুরু করবে তার সাথে সাথে এটি অনেক রিভিউ পাবার পাশাপাশি এর খবর মুখে মুখে ছড়িয়ে যাবে। বারবার শিরোনাম বদলানো হলে এই প্রক্রিয়াতে বাধা পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
- কি-ওয়ার্ড– টার্গেট ইউজাররা কোন কি-ওয়ার্ড গুলো সচরাচর ব্যবহার করে সেগুলো খুজে বের করে ব্যবহার করলে, সেগুলো সার্চ র্যাঙ্কিং বাড়াতে এবং প্রতিদ্বন্দীদেরকে পর্যবেক্ষণ করতে অনেক বেশি সহায়তা করে থাকে। এতে করে প্রতি সপ্তাহান্তে তুলনামূলক উন্নতিটাও বুঝা সহজ হয়।
যেহেতু টাইটেল এবং কিওয়ার্ড চাইলেই আপনার ইচ্ছেমত খুব সহজেই পরিবর্তন করতে পারছেন তার মানে সহজেই সেগুলো অপটিমাইজ করা যাচ্ছে, অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি।
২. সেকেন্ডারি ফ্যাক্টর:
- ডাওনলোড– অ্যাপগুলো মোট কতবার ডাওনলোড হয়েছে সেটি অ্যাপ স্টোর অপটিমাজেশনের ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে দুঃখ্যের বিষয় হল এখানে একজন অপটিমাইজারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।
- রেটিং এবং রিভিও– খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রন করা খুব কঠিন। তবে ব্যবহারকারীদেরকে খুশি করে ভাল রেটিং পাবার বেশ কিছু উপায় রয়েছে।
আজ এ পর্যন্তই, পরবর্তীতে টাইটেলে কি-ওয়ার্ড এর ব্যবহার, সার্চ রেজাল্টে রেটিং র্যাংক ও ডাওনলোডের হার এর প্রভাব এবং অ্যাপ স্টোর অপটিমাইজেশনের কিছু টিপস নিয়ে লিখবো।